মারাঠা শক্তির বিকাশ ও পতন অধ্যায় থেকে প্রশ্ন উত্তর - Fresh Gk Bangla

Breaking

Wednesday, August 31, 2022

মারাঠা শক্তির বিকাশ ও পতন অধ্যায় থেকে প্রশ্ন উত্তর

 Rise and fall of Maratha Power। মারাঠা শক্তির বিকাশ ও পত্তন। History G.k। History g.k questions Answer in Bengali। All competitive exams questions Answer। B.A History।



মারাঠা শক্তির বিকাশ ও পতন : শিবাজী থেকে পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধ: 



১.  শিবাজীর পিতা, মাতা ও অভিভাবকের নাম কী?

উঃ- শিবাজীর পিতা ও মাতা ছিলেন যথাক্রমে বিজাপুর রাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্মচারী শাহজী ভোঁসলে ও জিজাবাঈ। তার অভিভাবকের নাম দাদাজী কোওদের। প্রঃ কোন উপজাতিদের সংগঠিত করে শিবাজী প্রথম সামরিক বাহিনী তৈরি করেন?


২.শিবাজী প্রথম কোন দুর্গ অধিকার করেন?

 উঃ - পার্বত্য উপজাতি মাওয়ালীদের সংগঠিত করে শিবাজী প্রথম সামরিক বাহিনী তৈরি করেন। শিবাজী প্রথম তোরণা দুর্গ অধিকার করেন (১৬৪৬ খ্রিস্টাব্দ)।


৩. ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী কোন অঞ্চল অধিকার করেন?

উঃ- ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী জাউলি অঞ্চল অধিকার করেন


৪. শিবাজী প্রথম কোন বিজাপুর সেনাপতিকে নিহত করেন এবং কোন অস্ত্রের সাহায্যে ?

উঃ- শিবাজী কর্তৃক নিহত প্রথম বিজাপুর সেনাপতি আফজল খাঁ। শিবাজী বাঘনখ ও বিছুয়া (ছোট ছুরি) নামক দুই অস্ত্রের সাহায্যে আফজল খাঁকে হত্যা করেন। 


৫. শিবাজী কোন মুঘল সেনাপতিকে পরাস্ত করেন?

উঃ- মুঘল সেনাপতি শায়েস্তা খাঁকে পরাস্ত করেন শিবাজী।

 

৬. শিবাজীকে দমন করার জন্য ঔরঙ্গজেব প্রথম কোন সেনাপতিকে প্রেরণ করেন?

উঃ শিবাজীকে দমন করার জন্য ঔরঙ্গজেব প্রথম শায়েস্তা থাকে প্রেরণ করেন। 


৭. শিবাজী প্রথম কত খ্রিস্টাব্দে সুরাট লুণ্ঠন করেন? তিনি দ্বিতীয়বার কত খ্রিস্টাব্দে সুরাট লুণ্ঠন করেন?

উঃ- শিবাজী প্রথমবার ১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দে সুরাট লুণ্ঠন করেন। শিবাজী দ্বিতীয়বার ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে সুরাট লুণ্ঠন করেন।


৮. কোন মুঘল সেনাপতি শিবাজীকে সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করেন? কোন চুক্তি দ্বারা শিবাজী মুঘল বশ্যতা স্বীকার করেন?

উঃ- মুঘল সেনাপতি জয়সিংহ শিবাজীকে সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করেন। পুরন্দরের চুক্তি দ্বারা শিবাজী মুঘল বশ্যতা স্বীকার করেন।



৯. পুরন্দরের সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

 উঃ ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল শিবাজী এবং মুঘল শক্তির পক্ষে জয়সিংহের মধ্যে।


১০. ঔরঙ্গজেব শিবাজীকে কত হাজারী মনসবদার পদ দিতে চেয়েছিলেন? 

ডঃ ঔরঙ্গজেব শিবাজীকে পাঁচ হাজারী মনসবদার পদ দিতে চেয়েছিলেন।


১১. শিবাজী সিদিদের কাছ থেকে কোন স্থান অধিকারে ব্যর্থ হয়েছিলেন?

 উঃ শিবাজী সিদিদের কাছ থেকে জঞ্জিরা অধিকারে ব্যর্থ হয়েছিলেন।


১২. কোন দুর্গে ও কত খ্রিস্টাব্দে শিবাজীর রাজ্যাভিষেক হয়? তার রাজধানীর নাম কী? 

উঃ- ৬ জুন ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে সার্বভৌম রাজা হিসাবে রায়গড় দুর্গে শিবাজীর রাজ্যাভিষেক হয়। শিবাজীর রাজধানী ছিল রায়গড়। 


১৩. শিবাজী কী কী উপাধি গ্রহণ করেছিলেন?

উঃ- ছত্রপতি এবং গো ব্রাহ্মণ প্রতিপালক— এই দুইটি উপাধি শিবাজী গ্রহণ করেছিলেন।


১৪. 'শিব ছত্রপতি' হিসাবে কে পরিচিত ছিলেন? 

উঃ 'শিব ছত্রপতি' হিসাবে পরিচিত ছিলেন শিবাজী।


১৫. শিবাজীর গুরু কে ছিলেন?

উঃ: শিবাজীর গুরু ছিলেন রামদাস সমর্থ, যিনি শিষ্যদের মধ্যে মারাঠা জাতির অতীত গৌরব প্রচার করতেন।


১৬.'ভাগোয়া ঝাণ্ডা' কী?

উঃ: প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে শিবাজী তার রাষ্ট্রীয় পতাকার সঙ্গে শুরু রামদাস প্রদত্ত একটি গৈরিক পতাকা ব্যবহার করতেন। এই গৈরিক পতাকাই পরিচিত "ভাগোয়া ঝাণ্ডা' নামে।


১৭. শিবাজীর কোন পুত্র সাময়িকভাবে মুঘল পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন?

উঃ- শিবাজীর পুত্র শম্ভুজী সাময়িকভাবে মুঘল পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন।


১৮. স্বরাজ্য বলতে কী বোঝায় ?

উঃ- মৃত্যুর পূর্বে শিবাজী যে প্রত্যক্ষ শাসনাধীন সাম্রাজ্য গঠন করতে সমর্থ হয়েছিলেন তাকে মারাঠা স্বরাজ্য বলা হতো। এই অঞ্চল বিস্তৃত ছিল উত্তরে সুরাট থেকে দক্ষিণে কানাড়া, পূর্বে বাগলানা থেকে পশ্চিমে কর্ণাটক সহ বেলারী ও চিত্তুর জেলা।


১৯. মূলকাগিরি বলতে কী বোঝায় ?

উঃ- স্বরাজ্যের বাইরের যে অঞ্চলগুলি থেকে শিবাজী চৌথ ও সরদেশমুখী আদায় করতেন তাকে মুলকাগিরি বা মুঘলাই বলা হতো। এই স্থানগুলি মুঘল কর্তৃত্বাধীন ছিল। কর সংগ্রহের প্রবণতা থেকে বোঝা যায় মুলকাগিরি অঞ্চলের উপর সার্বভৌম অধিকার না থাকলেও শিবাজীর এক প্রকার আধিপত্য এইসব অঞ্চলে স্বীকৃত ছিল।


 ২০. কোন ঐতিহাসিক শিবাজী রাষ্ট্রকে 'দস্যু রাষ্ট্র' বলেছেন এবং কেন ?

উঃ- ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট এ. স্মিথ শিবাজীর রাষ্ট্রকে 'দস্যু রাষ্ট্র' (Robber State) বলেছেন। শিবাজী অন্য রাজ্য থেকে বলপূর্বক চৌথ ও সরদেশমুখী আদায় করতেন বলে স্মিথ শিবাজীর রাষ্ট্রকে এই অভিধা দিয়েছিলেন।


২১. অষ্টপ্রধান কাদের বলা হতো? 

উঃ শিবাজীকে যে-আটজন মন্ত্রী বা প্রধান বেসামরিক শাসনকার্য পরিচালনায় সাহায্য করত ,তাদের অষ্টপ্রধান বলা হতো। 


২২. পেশোয়া কাকে বলা হতো?

উঃ শিবাজীর প্রশাসনে অষ্টপ্রধানের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী ছিলেন পেশোয়া যাকে মুখ্য প্রধানও বলা হতো। সাম্রাজ্যের উন্নয়ন ও প্রজাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা ছিল তার কর্তব্য। পরবর্তীকালে শাহর সময় থেকে পেশোয়া মারাঠা রাজ্যের প্রকৃত শাসকে পরিণত হয়। তার সময়ে বংশানুক্রমিক পেশোয়াতন্ত্রের সূচনা করে পেশোয়াকে প্রকৃত শাসকে পরিণত করেছিলেন বালাজী বিশ্বনাথ। তৃতীয় ইগ-মারাঠা যুদ্ধে জয়লাভের পর বৃটিশ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী পেশোয়া পদ রদ করে (১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ)।


২৩. জমি পরিমাপের ক্ষেত্রে শিবাজী কী এককের প্রচলন করেছিলেন ?

উঃ- জমি পরিমাপের জন্য শিবাজী 'কাঠি' এককের প্রচলন করেছিলেন যা ছিল পাঁচ হাত পাঁচ মুঠি লম্বা একটি দণ্ড।


২৪. চৌথ কি?

উঃ- শিবাজী তার স্বরাজ্যের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে সেই দেশের নির্দিষ্ট করের ১/৪ অংশ আদায় করতেন। এই করকে চৌথ বলা হতো। স্বেচ্ছায় চৌথ প্রদান করলে মারাঠা বাহিনীর আক্রমণ ও লুণ্ঠন থেকে অব্যহতি পাওয়া যেত। এই কারণে চৌথকে এক প্রকার নিষ্কৃতি কর বলা যায়।


২৫. সরদেশমুখী কী?

উঃ- শিবাজীর রাজকীয় দাবির স্বীকৃতি স্বরূপ মারাঠা সাম্রাজ্যের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে তার রাজস্বের ১/১০ অংশ কর হিসাবে আদায় করা হতো। এই করকে সরদেশমুখী বলা হতো। স্বেচ্ছায় এই করদানের পরিবর্তে মারাঠা আক্রমণ থেকে অব্যহতি লাভ করা যেত।


২৬. শিবাজীর প্রশাসনে সেনাপ্রধানকে কী বলা হতো?

উঃ- শিবাজীর প্রশাসন ব্যবস্থায় সেনাপ্রধানকে বলা হতো সর-ই-নৌবত বা সেনাপতি। 


২৭. বর্ণী কী?

উঃ- শিবাজীর স্থায়ী সরকারী অশ্বারোহী সেনাদের বলা হত পাগা বা বর্গী। এদের সরকার, থেকে নিয়মিত বেতন, সরঞ্জাম, অশ্ব ও অস্ত্র প্রদান করা হতো। তাদের নির্দিষ্ট সেনানিবাসে থাকতে হতো।


২৮. শিলাদার কী?

উঃ শিবাজীর অশ্বারোহী বাহিনীর অস্থায়ী ভাড়াটে সৈনিকদের শিলাদার বলা হতো। যুদ্ধের সময় প্রয়োজন অনুসারে শিবাজী তাদের নিয়োগ করতেন। এরা কাজ অনুযায়ী বেতন পেত। শিলাদারদের নিজেদের খরচে অশ্ব ও অস্ত্র সংগ্রহ করতে হতো।


২৯. শিবাজীর মৃত্যুর পর কে ছত্রপতি হন?

উঃ- শিবাজীর মৃত্যুর পর ছত্রপতি হন তার পুত্র শম্ভুজী (১৬৮০–৮৯ খ্রিস্টাব্দ)। 


৩০. শিবাজীর পুত্র শম্ভুজীকে কোন মুঘল সম্রাট প্রাণদণ্ড দেন? শম্ভুজীর কোন পুত্রকে মুঘল শক্তি বন্দী করে রেখেছিল? 

উত্তর- ১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দে শিবাজীর পুত্র শম্ভুজীকে প্রাণদণ্ড দেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। শম্ভুজীর পুত্র শাহকে মুঘল শক্তি বন্দী করে রেখেছিল।


৩১. শম্ভুজীর মৃত্যুর পর কে রাজা হন?

উঃ- শম্ভুজীর মৃত্যুর পর রাজা হন শিবাজীর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান রাজারাম (১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দ - ১৭০০ খ্রিস্টাব্দ)।


৩২.  রাজারামের মৃত্যুর পর কে রাজা হন ?

উঃ রাজারামের মৃত্যুর পর রাজা হন তার শিশুপুত্র দ্বিতীয় শিবাজী এবং রাজকার্য পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তার মা তারাবাঈ।


৩৩. বন্দী শাহুকে কে কত খ্রিস্টাব্দে মুক্তি দেন ?

উঃ- বন্দী শাহকে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি দেন মুঘল সম্রাট প্রথম বাহাদুর শাহ।


৩৪. কোন চুক্তি দ্বারা শাহ মুঘল কর্তৃত্ব স্বীকার করেন? 

উঃ- ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে ফারুকশিয়ারের সভাসদ সৈয়দ ভাইদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির দ্বারা শাহ মুঘল কর্তৃত্ব স্বীকার করেন।


৩৫. কোন চুক্তিকে ঐতিহাসিক রিচার্ড টেম্পল মারাঠা জাতির ম্যাগনাকাটা' হিসাবে অভিহিত করেছেন?

উঃ- ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়ারের দুই প্রধান অভিজাত সৈয়দ ভ্রাতৃদ্বয় মারাঠা ছত্রপতি শাহর সঙ্গে যে-চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল তাকে সারে রিচার্ড টেম্পল মারাঠা জাতির ম্যাগনাকাটা' হিসাবে অভিহিত করেছেন।


৩৬. বালাজী বিশ্বনাথ কে?

উঃ- সামান্য এক রাজস্ব কর্মচারী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করলেও প্রশাসনিক কাজে দক্ষতার কারণে শাহ কর্তৃক বালাজী বিশ্বনাথ পেশোয়া পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে। তিনি পেশোয়া পদকে মারাঠা প্রশাসনের সর্বোচ্চপদে পরিণত করেছিলেন। তার কৃতিত্বের ফলে মারাঠা স্বরাজ্য সম্প্রসারিত হয়েছিল। তার কুটনৈতিক দক্ষতার কারণে মুঘল অধীনতা স্বীকারের মাধ্যমে শাহ দাক্ষিণাত্যের মুঘল সুবা থেকে চৌথ ও সরদেশমুখী কর আদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। ১৭২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান।


৩৭. কাকে দ্বিতীয় মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা' বলা হয়? 

উঃ- পেশোয়া বালাজী বিশ্বনাথকে বলা হয় 'দ্বিতীয় মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।তাকে এই অভিধা দিয়েছিলেন রোলিনসন।


৩৮. মহম্মদ শাহকে মুঘল সম্রাট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে কোন পেশোয়া সাহায্য করেছিলেন?

উঃ- মহম্মদ শাহকে সম্রাট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন পেশোয়া বালাজী বিশ্বনাথ।


৩৯. কহ্নোজি আংরে কে?

উঃ- কাহ্নাজি আংরে ছিলেন মারাঠা নৌ-সেনাপতি। পশ্চিম উপকূলের এই মারাঠা সর্দার শাহর মিত্র ছিলেন।


৪০. প্রথম বাজীরাও কে?

উঃ বালাজী বাজীরায়ের পুত্র প্রথম বাজীরাও ১৭২০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র উনিশ বছর বয়সে ছত্রপতি শাহ কর্তৃক পেশোয়া পদে বৃত হয়েছিলেন। মুঘল দুর্বলতার সুযোগে হিন্দু-পাদ-পাদশাহীর আদর্শকে সামনে রেখে তিনি মালব, গুজরাট সহ উত্তর ভারতে মারাঠ্য কর্তৃত্ব বিস্তার করেছিলেন। অন্যদিকে নিজামকে একাধিক যুদ্ধে পরাজিত করে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতে মারাঠা কর্তৃত্ব স্বীকার করে নিতে বাধ্য করেছিলেন প্রথম বাজীরাও। সেনাপতি সহ মারাঠা বিদ্রোহী নেতাদের দমন ও সাম্রাজ্য বিস্তার করে প্রথম বাজীরাও উত্তর ও দক্ষিণ ভারতে মারাঠা কর্তৃত্বকে সুদৃঢ় করে তুলেছিলেন। ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান।


৪১. হিন্দু পাদ পাদশাহী কী?

উঃ- এই আদর্শের প্রবক্তা পেশোয়া প্রথম বাজীরাও। এর অর্থ ছিল ভারত থেকে মুসলমান শাসন ধ্বংস করার জন্য ভারতের হিন্দু শাসকদের সঙ্ঘবদ্ধ করা। এর প্রয়োগের সঙ্গে যুক্ত ছিল মারাঠা শক্তির বিকাশ এবং অন্যান্য হিন্দু রাজাদের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ ও সমতার আচরণ করা, যাতে তারা মুসলমান কর্তৃত্ব থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে। এই আদর্শের কারণে প্রথম বাজীরাও তার সামরিক অভিযানকালে হিন্দু শাসকদের সাহায্য লাভ করেছিলেন। পরবর্তী পেশোয়া বালাজী বাজীরাও এই আদর্শকে ত্যাগ করে হিন্দুদের উপর মারাঠা কর্তৃত্ব অগ্রসর হয়েছিলেন। ফলে হিন্দু শক্তিরা মারাঠাদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হয়ে ওঠে।


 ৪২. উত্তর ভারত অভিযানকালে কোন দুই হিন্দু রাজা প্রথম বাজীরাওকে সাহায্য করেছিল? 

উঃ উত্তর ভারত অভিযান কালে প্রথম বাজীরাওকে সাহায্য করেছিলেন অম্বরের রাজা দ্বিতীয় জয়সিংহ ও বুন্দেলখণ্ডের শাসক ছত্রশাল বুন্দেলা ।


৪৩. মুন্সীসেওগাঁও চুক্তি কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

উঃ- ১৭২৮ খ্রিস্টাব্দে মুঙ্গীসেওগাঁও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল মারাঠা ছত্রপতি শাহ এবং হায়দ্রাবাদের পরাজিত নিজামের মধ্যে। এই চুক্তি দ্বারা নিজাম শাহর প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় শম্ভুজীর প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। 


৪৪. ওয়ার্নার সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

উঃ ১৭৩১ খ্রিস্টাব্দে ওয়ার্নার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ছত্রপতি শাহর সঙ্গে কোলহাপুরের মারাঠা নায়ক দ্বিতীয় শম্ভুজীর। এই চুক্তির দ্বারা সাতারা ও কোলহাপুর সাম্রাজ্যের মধ্যে ব্যবচ্ছেদ ঘটে।


৪৫. ধান্ডোই যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়? এই যুদ্ধে কে কাকে পরাজিত করে?

উঃ- ১৭৩১ খ্রিস্টাব্দে ধাভোই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে শাহুর পেশোয়া প্রথম বাজীরাও পরাস্ত করেন বাজীরাওয়ের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত মারাঠা সেনাপতি ত্রিম্বক রাও দাভাড়েকে।


 ৪৬. ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে শাহুর মুক্তি মারাঠা রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে?

উঃ- শাহর মুক্তির ফলে মারাঠা শক্তি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল মারাঠা ছত্রপতি হিসাবে গ্রহণ করে শাহকে। অন্যদিকে একদল মারাঠা ছত্রপতি হিসাবে সমর্থন করে শিবাজীর অপর পৌত্র তৃতীয় শিবাজীকে। এই দুই শক্তির কেন্দ্র ছিল যথাক্রমে সাতারা ও কোলহাপুর।


৪৭. দোরহা সরাইয়ের সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

উঃ- ১৭৩৮ খ্রিস্টাব্দে দোরহা সরাইয়ের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় মারাঠা ছত্রপতি শাহ এবং হায়দ্রাবাদের পরাজিত শাসক নিজামের মধ্যে। এই সন্ধি দ্বারা নিজাম মালবের উপর মারাঠা কর্তৃত্ব স্বীকার করে নেন।


৪৮. প্রথম বাজীরাওয়ের সময়ে মারাঠা সাম্রাজ্যের মধ্যে যে-চারটি রাজ্য গড়ে উঠেছিল সেগুলি কী কী?

উঃ রাজারামের সময়ে প্রবর্তিত জায়গীর ব্যবস্থার ফলে কয়েকটি মারাঠা পরিবার ক্রমশ রাজনৈতিক শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে এবং প্রথম বাজীরাওয়ের সময়ে এরা মারাঠা সাম্রাজ্যের মধ্যে রাজ্য গড়ে তোলে। এইরূপ চারটি রাজ্য হচ্ছে বেরারে ভোঁসলে রাজ্য, বারাসাতে গাইকোয়াড় রাজ্য, গোয়ালিয়রে সিন্ধিয়া রাজা এবং ইন্দোরে হোলকার রাজ্য।


৪৯.কে কাকে বলেছেন 'মারাঠা সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা' (Second founder of the Maratha Empire) ?

উঃ- ঐতিহাসিক কালীকিঙ্কর দত্ত 'মারাঠা সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা, হিসাবে অভিহিত করেছিলেন পেশোয়া প্রথম বাজীরাওকে।


 ৫০.কে কাকে 'বৃহত্তর মহারাষ্ট্রের সৃষ্টিকর্তা, (The creator of great Maharastra) হিসাবে অভিহিত করেছেন? 

উঃ- ঐতিহাসিক জি. এস. সরদেশাই 'বৃহত্তর মহারাষ্ট্রের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে অভিহিত করেছেন পেশোয়া প্রথম বাজীরাওকে।


৫১.কে কাকে 'মারাঠা জাতির নেপোলিয়ন' হিসাবে অভিহিত করেছিলেন? 

উত্তর- গ্রান্ট ডাফ মারাঠা জাতির নেপোলিয়ন হিসাবে অভিহিত করেছিলেন প্রথম বাজীরাওকে।


৫২. বালাজী বাজীরাও কে?

উঃ প্রথম বাজীরাওয়ের মৃত্যুর পর পেশোয়া পদে বৃত হন তার পুত্র বালাজী বাজীরাও। তিনি পিতার আদর্শ থেকে সরে এসে অন্যান্য হিন্দু রাজাদের কর্তৃত্বাধীন করে মারাঠা সাম্রাজ্য স্থাপনে অগ্রসর হয়েছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে অ-মারাঠা ভাড়াটে সৈন্য যুক্ত করেছিলেন এবং গেরিলা যুদ্ধ কৌশল ত্যাগ করে মুখোমুখি যুদ্ধ কৌশল গ্রহণ করেছিলেন। তার সময়েই সুদূর বাংলা পর্যন্ত স্থান থেকে চৌথ সংগ্রহ করা হয়েছিল। বালাজী নিজামকে পরাজিত করেছিলেন এবং আহমদ শাহ আবদালীর কর্তৃত্ব থেকে মুঘল সম্রাটকে মুক্ত করেছিলেন ও পাঞ্জাব অধিকার করেছিলেন। কিন্তু ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দে তার বাহিনী পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আবদালীর কাছে পরাজিত হলে মারাঠা কর্তৃত্বের সাময়িক পতন ঘটে। এই বছরেই তিনি মারা যান।



৫৩. বালাজী বাজীরাও কোন শহর থেকে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন?

 উঃ বালাজী বাজীরাও পুণা শহর থেকে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন।


৫৪. শাহুর মৃতুর পর কে ছত্রপতি বা মারাঠা রাজা হন? 

উঃ শাহুর মৃত্যুর পর ছত্রপতি বা মারাঠা রাজা হন তার পুত্র রামরাজা (১৭৫০ খ্রিস্টাব্দ)।


প্রঃ বালাজী বাজীরাও দিল্লি থেকে আহম্মদ শাহ আবদালীর কোন প্রতিনিধিকে বিতাড়িত করেন এবং কাকে সম্রাট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন?


উঃ বালাজী বাজীরাও দিল্লি থেকে আহামদ শাহ আবদালীর প্রতিনিধি নাজিমউদ্দৌলাকে বিতারিত করেন ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীরকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রঃ পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়? এই যুদ্ধে কে পরাজিত হয়?


উঃ ১৪ জানুয়ারি ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দে পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে পেশোয়া বালাজী বাজীরাও-এর নেতৃত্বাধীন মারাঠা শক্তি পরাজিত হয়। আফগান নায়ক আহমদ শাহ আবদালীর কাছে।


প্রঃ পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজয়ের দুইটি কারণ লেখ। উঃ পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজয়ের কারণ - ১। সেনাপতি হিসাবে আহমদ শাহ আবদালী ছিলেন সদাশিব রাও অপেক্ষা অনেক বেশি দক্ষ, কার্যকর ও উপযুক্ত, ২। প্রথম বাজীরাও-এর 'হিন্দু- পাদ-পাদশাহী' নীতির ফলে রোহিলাখণ্ড ও অযোধ্যার মুসলিম শাসক এবং শিখ, জাঠ প্রভৃতি অমারাঠা হিন্দুশক্তি মারাঠাদের বির


করেছিল বা নিরপেক্ষ থেকেছিল।


প্রঃ কোন সেনাপতির নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনী ১৭৪০-এর দশকে বাংলা আক্রমণ করেছিল? উঃ রঘুজী ভোঁসলের নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনী ১৭৪০-এর দশকে বাংলা আক্রমণ


করেছিল। প্রঃ বাংলার নবাবের কাছ থেকে ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে মারাঠারা কী লাভ করেছিল?


উঃ বারংবার মারাঠা আক্রমণ দ্বারা পর্যুদস্ত হয়ে বাংলার নবাব আলিবর্দী খাঁ ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে মারাঠাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। এই চুক্তি দ্বারা মারাঠারা চৌথ হিসাবে বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা এবং সুবর্ণরেখা নদীর পশ্চিমের উড়িষ্যা রাজ্যের রাজস্ব লাভ করে। প্রঃ ভাস্কর পণ্ডিত কে?


উঃ মারাঠা গোষ্ঠীপতি রঘুজী ভোঁসলের এক সামরিক নেতা ছিলেন ভাস্কর পণ্ডিত যিনি ১৭৪৩-৪৫ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে বাংলা আক্রমণ করেছিলেন। সম্মুখ যুদ্ধে তাকে পরা


করতে সমর্থ না হয়ে নবাব আলিবর্দী খাঁ তাকে কৌশলে হত্যা করেছিলেন।





No comments:

Post a Comment