মুসলমান শাসনাধীন ভারত ইতিহাস থেকে প্রশ্ন উত্তর - Fresh Gk Bangla

Breaking

Wednesday, August 31, 2022

মুসলমান শাসনাধীন ভারত ইতিহাস থেকে প্রশ্ন উত্তর

   মুসলমান শাসনাধীন ভারত ইতিহাস থেকে প্রশ্ন উত্তর:





১. আবুল ফজল রচিত দুটি ইতিহাস গ্রন্থের নাম কর?

উঃ আবুল ফজল রচিত দুইটি ইতিহাস গ্রন্থের নাম 'আকবরনামা' ও 'আইন-ই-আকবরী'। 


২. প্রঃ 'আকবরনামা' কী?

উত্তর - আবুল ফজল কর্তৃক তিন খণ্ডে লিখিত একটি ইতিহাস গ্রন্থ 'আকবরনামা'। এর প্রথম খণ্ডে তৈমুর থেকে হুমায়ুন পর্যন্ত মুঘল বংশের ইতিহাস বর্ণিত আছে এবং পরবর্তী দুই খণ্ডে ১৬০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আকবরের রাজত্বকালের কালানুযায়ী বর্ণনা লিপিবন্ধ আছে। এখানে কেবলমাত্র শাসন ব্যাবস্থা সম্পর্কিত তথ্যের উল্লেখই নেই, নতুন ব্যবস্থা বা আইন প্রণয়নের কারণেরও উল্লেখ আছে। আকবরের রাজত্বকাল সম্বন্ধে এই গ্রন্থ একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান 


৩. প্রঃ 'আইন-ই-আকবরী' কী?

উঃ-  আবুল ফজল কর্তৃক তিন খণ্ডে লিখিত একটি গ্রন্থ 'আইন-ই-আকবরী' যেখানে শাসন ব্যবস্থার সমস্ত বিষয় ও বিভাগ সম্বন্ধে আকবর কর্তৃক প্রদ্যের নির্দেশগুলি সঙ্কলিত আছে। সরকারী নির্দেশ ছাড়া আকবরের সাম্রাজ্যের নানা পরিসংখ্যান এই গ্রন্থে পাওয়া যায়। তৃতীয় খণ্ডে লেখকের বংশ পরিচয় ও জীবনী লিপিবদ্ধ আছে।


৪. কে লিখেছিলেন 'তবাকৎ-ই-আকবরী'?

উঃ তরাকৎ-ই-আকবরী' লিখেছিলেন খাজা নিজামউদ্দিন আহম্মদ। 


৫.  জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীর নাম কী?


উঃ জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীর নাম 'তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী"। জাহাঙ্গীর নিজে এই গ্রন্থে তার রাজত্বের প্রথম সতেরো বছরের বিবরণ লিপিবন্ধ করেছেন। তার রাজত্বের শেষ দুই বছরের ইতিহাস জাহাঙ্গীরের নির্দেশে এই গ্রন্থে লিখেছেন মুতামিদ বা মুতানা খান।


৬. কে লিখেছিলেন ইকবালনামা'?

উঃ-  'ইকরালনামা' লিখেছিলেন মুতামদ খান


৭.পাদশাহনামা' কে রচনা করেন।

উঃ- 'পাদশাহনামা' রচনা করেন আব্দুল হামিদ লাহোরী। দুই পর্বে বিভক্ত এই গ্রন্থে শাহজাহানের জীবনের প্রাক-সম্রাট পর্ব এবং সম্রাট হিসাবে প্রথম কুড়ি বছরের ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে।



৮.  শাহজাহানের নির্দেশে কোন বিবরণী গ্রন্থ রচিত হয়েছিল? এই গ্রন্থ রচনার কাজে কে কে যুক্ত ছিলেন ? 

উঃ- শাহজাহানের নির্দেশে তিন খণ্ডে রচিত হয়েছিল তার শাসনকালের বিবরণী গ্রন্থ‘পাদশাহনামা'। এই বিবরণী গ্রন্থ রচনা করেছিলেন পর্যায়ক্রমে হাকিম হাজিজ জিলানী, মুল্লা আবদুল লতিফ গুজরাটী, মীর্জা জালালা তাবাতাবাই, মুহম্মদ আমিন কাজওয়ানি, শেখ আবদুল হামিদ লাহোরী, সানাউল্লা খান, মুহম্মদ ওয়ারিশ এবং ফাজিল খান।


৯.  কে লিখেছিলেন 'শাহজাহাননামা'?' 

উঃ- 'শাহজাহাননামা' বা 'অমল-ই-সালি' লিখেছিলেন মুহম্মদ সালি কাম্বু। শাহজাহানের রাজত্বের শেষ দিকের জন্য এই গ্রন্থটি অত্যন্ত মূল্যবান।


 ১০.  'মাসির-ই-আলমগীরি' কে লিখেছিলেন?

উঃ- "মাসির-ই-আলমগীরি' লিখেছিলেন সাকি মুস্তাদ খান।


 ১১. কাফি খাঁ-র প্রকৃত নাম কী? তার রচিত গ্রন্থের নাম কী?

 উঃ- কাফি খাঁ-র প্রকৃত নাম মহম্মদ হাসিম।

তার গ্রন্থের নাম মুস্তখার-উল-লুবাব'। সরকারী বিধিনিষেধের ফলে গোপনে লেখা এই গ্রন্থ সামগ্রিকভাবে তৈমুর বংশের শাসনাধীন ভারতের ইতিহাস এবং বিশেষভাবে ঔরঙ্গজেবের আমলের ইতিহাস।


১২. আব্দুল কাদির বদায়ূনী রচিত গ্রন্থের নাম কী ?

উঃ- আব্দুল কাদির বদায়ূনী রচিত গ্রন্থের নাম 'মুস্তখার-উল-তওয়ারিখ' ("মুস্তাখাবউৎ তওয়ারীখ')।


১৩. ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালের দুইজন হিন্দু ঐতিহাসিকের নাম করো। 

উঃ- ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালের দুইজন প্রখ্যাত হিন্দু ঐতিহাসিক সুজন রাই ভান্ডারী এবং ভীমসেন সাকসেনা।


১৪. সুজন রাই ভান্ডারী লিখিত গ্রন্থের নাম কী ? 

উঃ- সুজন রাই ভান্ডারী লিখিত গ্রন্থের নাম 'খুলসৎ-উৎ-তওয়ারিখ'। ১৬৯৫–১১ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে এই গ্রন্থটি রচিত হয়েছিল।


 ১৫.  ভীমসেন রচিত গ্রন্থের নাম কী?

উঃ- ভীমসেন সাকসেনা রচিত গ্রন্থের নাম 'নুসখা-ই-দিলকুশ' ('নুশকা ই দিলখুশা')। বেশিরভাগ সময় ভীমসেন দক্ষিণ ভারতে উচ্চপদে আসীন থাকায় ১৬৭০–১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে দক্ষিণাত্যে মুঘল কার্যকলাপের ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।



১৬.  ঈশ্বরদাস রচিত গ্রন্থের নাম কী?

উঃ- ঈশ্বরদাস নগর রচনা করেছিলেন 'ফুতুহৎ-ই-আলমগীরী'।


১৭. 'আলমগীরনামা' গ্রন্থের রচয়িতা কে?

উঃ- 'আলমগীরনামা' রচনা করেছিলেন মীর্জা মহম্মদ কাজিম। ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালের প্রথম দশ বছরের নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক উপাদান এই গ্রন্থটি।


১৮. কে লিখেছিলেন 'শিব ছত্রপতি চরিত'?

উঃ- “শিব ছত্রপতি চরিত' লিখেছিলেন কৃষ্ণজি অনন্ত সভাসদ


 ১৯. কে লিখেছিলেন 'বাহারিস্তান-ই-ঘায়েবি ?

উঃ বাহারিস্তান-ই-ঘায়েবি' লিখেছিলেন মীর্জা নাথান (আলাউদ্দিন ইসফাহান)।


২০.  মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে বাংলা ভাষায় রচিত দুইটি গ্রন্থের নাম করো।

উঃ মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে বাংলা ভাষায় রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত 'চন্ডীমঙ্গল' ও কৃষ্ণদাস কবিরাজ রচিত চৈতন্যমঙ্গল'। 


২১. বাংলাদেশ সম্পর্কিত সলিমুল্লা লিখিত গ্রন্থের নাম কী?

উঃ- বাংলাদেশ সম্পর্কিত সলিমুল্লা লিখিত গ্রন্থের নাম 'তারিখ-ই-বাংলা’।


 ২২. ‘রিয়াজ উল সালাতিন' গ্রন্থের লেখক কে?

উঃ- রিয়াজ উল সালাতিন' গ্রন্থের লেখক গুলাম হোসেন সালিম।


২৩. মুঘল যুগে ভারত ভ্রমণ করেছেন এমন দুইজন ফরাসি পর্যটকের নাম করো।

উঃ- মুঘল যুগে ভারত ভ্রমণকারী ফরাসি পর্যটকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাঁ বাপিস্তে তাভেরনিয়ার এবং সারা বার্ণিয়ে।


 ২৪. মুঘল যুগে ভারতে এসেছিলেন এমন দুইজন ইতালীয় পর্যটকের নাম করো।

উঃ- ইতালি থেকে মুঘল যুগে ভারতে এসেছিলেন নিকলো মানুচি, জেমেল্লি কারেরি প্রমুখ পর্যটক। 


২৫. কোন ডাচ পর্যটক মুঘল ভারতে এসেছিলেন?

উঃ- জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে হল্যান্ড থেকে ভারতে এসেছিলেন পর্যটক পালসারেত।


 ২৬. মুঘল ভারতের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন এমন দুইজন ইংরাজের নাম করো।

উঃ-  যে-সমস্ত ইংরাজ মুঘল ভারতের বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন তাদের মধ্যে


২৭.কে লিখেছিলেন 'তারিখ-ই-ফিরিস্তা' তার পৃষ্ঠপোষকতা কে করেছিলেন? 

উঃ 'তারিখ-ই-ফিরিস্তা' লিখেছিলেন মহম্মদ কাসিম ফিরিস্তা (১৬০৯ খ্রিস্টাব্দ)। ফিরিস্তার পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন বিজাপুরের সুলতান ইব্রাহিম আদিল শাহ।


২৮. মনসারেত কে?

উঃ অ্যান্টনিও মনসারেত ছিলেন একজন জেসুইট পাদ্রী যিনি গোয়ার পর্তুগীজ প্রশাসনের নির্দেশে ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে আকবরের রাজসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৫৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভারতে ছিলেন। আকবরকে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীতে পরিণত করার প্রচেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হন। লাতিন ভাষায় তিনি তার ভারতস্থিত কার্যাবলীর বিবরণ লিপিবন্ধ করে গিয়েছেন।


২৯. মানুচি কে?

উঃ নিকলো ভেনেসিয়ান মানুচি একজন ইতালীয় পর্যটক যিনি ১৬৫৩–১৭০৮ খ্রিস্টাব্দ সময়কাল ভারতে অতিবাহিত করেছিলেন। তার লেখা 'স্টোরিস দো মোগর' মুঘল যুগ সম্পর্কিত একটি উল্লেখযোগ্য সাহিত্য উপাদান।


৩০. তেভারনিয়ার কে?

উঃ- জাঁ বাপিস্তে তেভারনিয়ার (১৬০৫-১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ফরাসি পর্যটক ও রত্ন ব্যবসায়ী। ১৬৩৯-৪০ খ্রিস্টাব্দ তিনি প্রথমবার ভারতে এসে আগ্রা ও গোলকুন্ডা ভ্রমণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি আরো তিনবার ভারতে এসে দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেছিলেন এবং ১৬৬৭-৬৮ খ্রিস্টাব্দে শেষবারের মত ভারত ত্যাগ করেছিলেন। তিনি যে-ভ্রমণ বৃত্তাত্ত লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন তা মুঘল যুগের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয়।


৩৪. বার্নিয়ে কে?

উঃ- ফরাসি ডাক্তার ফ্রাঁসোয়া বানিয়ে ১৬৫৬–৬৮ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পরিভ্রমণ করেছিলেন। ভারত ভ্রমণ' নামে লিখিত তার বিবরণী থেকে শাহজাহানের শেষ ও ঔরঙ্গজেবের শাসনকালের প্রথম দিক সম্বন্ধে মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশের সমৃদ্ধি দ্বারা মোহাবিষ্ট হলেও সাধারণ মানুষের দারিদ্র্যের বর্ণনা তার বিবরণী গ্রন্থে পাওয়া যায়।




No comments:

Post a Comment