জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়: দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ( control and coordination in Living organisms) | class 10 life science 1st chapter questions answers| WB bord class 10 life science suggetion - Fresh Gk Bangla

Breaking

Friday, February 2, 2024

জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়: দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ( control and coordination in Living organisms) | class 10 life science 1st chapter questions answers| WB bord class 10 life science suggetion

 জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়: দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ( control and coordination in Living organisms) | class 10 life science 1st chapter questions answers| WB bord class 10 life science suggetion 


1. সংবেদনশীলতা ( Sensitivity) কাকে বলে?

উত্তর :- সংবেদনশীলতা ( Sensitivity) : যে ক্ষমতা বা বৈশিষ্ট্য দ্বারা জীব বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ পরিবেশের যে-কোনো পরিবর্তনকে শনাক্ত করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী সাড়াপ্রদানের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তাকে সংবেদনশীলতা ( Sensitivity) বা উত্তেজিতা (Irritability) বলে।


2. আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা সংক্রান্ত আবিষ্কারের ঘটনা সংক্ষেপে উল্লেখ করো।

উত্তর :-  আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ক্রেসকোগ্রাফ (Crescograph) যন্ত্রের সাহায্যে উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা করেন। প্রমাণ বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে, উদ্ভিদরাও প্রাণী এবং মানুষের মতো পরিবেশের নানা পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী যথাযথ সাড়া- জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কৃত ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র প্রদান করে।

আবিষ্কারের ঘটনা : 1901 সালের 10 মে, লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির সেন্ট্রাল হলে বিশ্ববিখ্যাত বিভিন্ন বিজ্ঞানীর সামনে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু এই পরীক্ষাটি করে দেখান।

একটি গাছকে পাত্রে রাখা বিষাক্ত ব্রোমাইড দ্রবণে স্থাপন করেন। ও গাছের কাণ্ডে ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্রটি লাগান।


পর্যবেক্ষণ : পর্দায় একটি আলোকিত স্থান দেখা যায়। আলোকিত অংশটি ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো (To and fro movement) সঞ্চালিত হয়, যা অনেকটা প্রাণীদের নাড়িস্পন্দনের (Pulse beats) মতো মনে হয়। হঠাৎই আলোকিত অংশটি দ্রুত আন্দোলিত হয় এবং অবশেষে স্থির হয়ে যায়।


• সিদ্ধান্ত :- বিষাক্ত ব্রোমাইড দ্রবণের (হাইডোরোমিক অ্যাসিডের লবণ) সংস্পর্শে গাছটি মারা যায়। যেমনভাবে বিষপানে কোনো প্রাণী মৃত্যুর আগে ছটফট করে, সেইরকম উদ্ভিদটিও বিষের সংস্পর্শে প্রতিক্রিয়া ঘটায় এবং একসময় মারা যায়।

এই আবিষ্কারের ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় গাছের প্রাণ আছে এবং প্রাণী ও মানুষের মতোই গাছেরা উদ্দীপনায় সাড়া দেয়। জেনে রাখো : বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু 'রেজোন্যান্ট রেকর্ডার' নামক যন্ত্রের সাহায্যে প্রাণীদেহের মতো উদ্ভিদের দেহেও 'প্রতিবর্ত চাপ' (Reflex Arc) -এর উপস্থিতি প্রমাণ করেন।


৩.  উদ্দীপক (Stimulant) কাকে বলে? উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদদেহে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়ার উদাহরণসহ ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর:- উদ্দীপক (Stimulant) : ভৌত, রাসায়নিক বা যান্ত্রিক যে-সমস্ত বাহ্যিক অথবা অভ্যন্তরীণ শক্তি বা অবস্থা জীবের দ্বারা শনাক্ত হয় এবং জীবদেহে বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টির মাধ্যমে জীবকে প্রতিক্রিয়া বা সাড়া প্রদানে সক্ষম করে তোলে, তাদের উদ্দীপক বা স্টিমুল্যান্ট বলে। উদাহরণ : আলো, চাপ, তাপ, স্পর্শ প্রভৃতি।

উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদাদাহ সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন উদ্দীপকের প্রভাবে বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। উদ্ভিদ তার বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে বিভিন্ন উত্তেজনায় সাড়া দেয়, যেমন – 0 লজ্জাবতী উদ্ভিদ (Mimosa pudica)-এর পাতার পত্রকগুলিকে স্পর্শ করলে (হাত বা পেনসিল দিয়ে) পত্রকগুলি ভাঁজ হয়ে নুইয়ে পড়ে। এখানে স্পর্শ হল উদ্দীপক। ও সূর্যমুখী ফুল সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে ফোটে। এখানে সূর্যের আলো হল উদ্দীপক।

3) সূর্যশিশির উদ্ভিদের পাতায় উপস্থিত রোমগুলি কোনো পতঙ্গের = প্রোটিন) সংস্পর্শে এলেই পতঙ্গের দিকে বেঁকে গিয়ে পতঙ্গকে আবদ্ধ করে। এখানে প্রোটিন হল উদ্দীপক।


 4. উদ্ভিদের উদ্দীপনায় সাড়া প্রদানের পদ্ধতি কীভাবে ঘটে উদাহরণসহ আলোচনা করো।

 উত্তর:- উদ্দীপনার প্রভাবে উদ্ভিদের সাড়া দেওয়ার ঘটনাটি তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। যথা- • উদ্দীপনা গ্রহণ : উদ্ভিদের নির্দিষ্ট অঙ্গের কোশ বা কলার দ্বারা নির্দিষ্ট উদ্দীপনা গৃহীত হয় এবং উদ্দীপনার প্রকৃতি ও তীব্রতার মাত্রা শনাপ্ত হয়। ও উদ্দীপনা পরিবহণ : উদ্ভিদদেহে কোনো উদ্দীপনা গৃহীত হওয়ার পর প্লাজমোডেসমাটার দ্বারা কোশরসের মাধ্যমে এই উদ্দীপনা সাড়া প্রদানকারী উদ্ভিদ অঙ্গ বা কলার পরিবাহিত হয়। ও সাড়াপ্রদান ও সংবেদনশীলতা : উদ্দীপনার প্রভাবে নির্দিষ্ট হরমোন ক্ষরণ বা রসস্ফীতির তারতম্যজনিত কারণে উদ্ভিদ অঙ্গ সাড়াপ্রদান করে। একে সংবেদনশীলতাও বলা হয়।


উদাহরণ : (i) লজ্জাবতী গাছের পাতাকে স্পর্শ করলে পাতাগুলি মুড়ে যায়। (ii) বনচাড়াল-এর ত্রিফলকের পার্শ্বীয় কলক দুটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পর্যায়ক্রমে উপর নীচে আবর্তন করে। (1) আমরুল, বাবলা প্রভৃতি উদ্ভিদের পাতা তীব্র আলো ও উন্নতার প্রভাবে খুলে যায়। (iv) আলোর উৎসের দিকে জলজ এককোশী শৈবাল ক্ল্যামাইডোমোনাস, ভলভন্ন প্রভৃতির সামগ্রিক সঞ্চালন ঘটে।


5 .চলন ( Movement) কাকে বলে। উদ্ভিদ চলনের প্রকারভেদগুলি একটি ছকের মাধ্যমে লেখো। 

উত্তর :- ( Moversient) : যে প্রক্রিয়ায় কোনো জীব এক জায়গায় স্থির থেকে উদ্দীপকের প্রভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেহের কোনো দেশ বা অপ্রত্যকের সঞ্চালনের মাধ্যমে সাড়াপ্রদান করে, সেই প্রক্রিয়াকে চলন বা মুভমেন্ট বলে।


6. ট্যাকটিক চলন কাকে বলে? উদাহরণসহ ট্যাকটিক চলনের প্রকারভেদগুলি ব্যাখ্যা করো। 


উত্তর :- ট্যাকটিক চলন (Tactic movement) : বাহ্যিক উদ্দীপকের উৎসের গতিপথ ও তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদের সমগ্রদেহের বা দেহাংশের বা কোশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়াকে ট্যাকটিক চলন বলে।


উদ্দীপকের প্রকৃতি অনুযায়ী ট্যাকটিক চলন প্রধানত চার প্রকার। যথা—


১.ফোটোট্যাকটিক (Phototactic) চলন:-  উদ্ভিদের সমগ্র দেহ যখন আলোক উদ্দীপকের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তখন তাকে ফোটোট্যাকটিক চলন বলে। উদাহরণ— ভলভক্স এবং ক্ল্যামাইডোমোনাস নামক শৈবাল স্বল্প আলোর দিকে অগ্রসর হয়, কিন্তু প্রখর আলো থেকে দূরে সরে যায়।


২.থার্মোট্যাকটিক (Thermotactic ) : উদ্ভিদের সমগ্র দেহ যখন উয়তা উদ্দীপকের প্রভাবে স্থানান্তরিত হয়, তখন তাকে থার্মোট্যাকটিক চলন বলে। উদাহরণ—ক্ল্যামাইডোমোনাস নামক শৈবাল বেশি উন্নতার দিকে সরে যায়।।


৩. কেমোট্যাকটিক (Chemotactic ) : উদ্ভিদের সম দেহ যখন কোনো রাসায়নিক পদার্থের আকর্ষণে স্থানান্তরিত হয়। তখন তাকে কেমোট্যাকটিক চলন বলে। উদাহরণ – গ্লুকোজের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে মসের শুক্রাণু ডিম্বাণুর দিকে ধাবিত হয় এবং ম্যালিক অ্যাসিড দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে ফার্ন গাছের শুক্রাণু ডিম্বাণুর দিকে ধাবিত হয়।


 ৪.হাইড্রোট্যাকটিক (Hydrotactic) চলন : উদ্ভিদের সমগ্র দেহ যখন জল উদ্দীপকের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তখন তাকে হাইড্রোট্যাকটিক চলন বলে। উদাহরণ—এককোশী শৈবাল শুষ্ক স্থান। থেকে জলের দিকে যায়।




No comments:

Post a Comment