- Fresh Gk Bangla

Breaking

Friday, March 3, 2023

 সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রথম অধ্যায় - ইতিহাসের ধারণা


1.  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে ইতিহাস কেন'নিশীথকালের দুঃস্বপ্নকাহিনিমাত্র' ছিল ? 

উত্তর:-  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, ভারতবর্ষের ইতিহাসে রাজা, সম্রাট, যুদ্ধ, রাজনীতিসর্বস্ব কথা পড়ে একঘেঁয়ে লাগত তিনি বলেছেন, এগুলি পড়ে আমরা মুখস্থ করে পরীক্ষা দিই সেইজন্য তাঁর কাছে ভারতবর্ষের ইতিহাস ছিল 'নিশীথকালের দুঃস্বপ্নকাহিনিমাত্র।


2. কেন আমাদের ইতিহাস জানা দরকার ?

উত্তর :-অতীতের সঙ্গে বর্তমানের সেতুবন্ধন রচনা করে ইতিহাস। ইতিহাস শুধুমাত্র রাজা-সম্রাটদের কাহিনী, সাল- তারিখ বা যুদ্ধের বিশ্লেষণ নয়। এর মধ্যে নানা যুক্তিতর্কের খতিয়ান মিশে আছে, যা সাক্ষ্য প্রমাণাদি দ্বারা প্রমাণিত হয়। এছাড়াও ইতিহাস পাঠের দ্বারা মানবসভ্যতার সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মীয় জীবনযাত্রার কথা জানা যায়। সেইজন্য ইতিহাস জানা দরকার।


3.  ভারতের ইতিহাসকে ক-টি যুগে ভাগ করা হয় এবং কী কী ? 

উত্তর :- ভারতের ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়: সেগুলি হল- প্রাচীন যুগ মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ।


4. বর্তমান যুগকে কেন ‘বিজ্ঞানের যুগ' বলা হয় ?

উত্তর:- বর্তমানে মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাপনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রয়োজন। এমনকি আমাদের কথাবার্তার মধ্যেও নানাধরনের বিজ্ঞানের ছোঁয়া থাকে। বর্তমানে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে জড়িত। সেইজন্য বর্তমান যুগকে "বিজ্ঞানের যুগ' বলা হয়।


 5. ভারতের আধুনিক যুগের যে-কোনো দুটি গুৰুত্বপূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করো।

উত্তর:-  ভারতের আধুনিক যুগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল— 1) 1757 খ্রিস্টাব্দের পলাশির যুদ্ধ ও ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে  ভারতবর্ষের বিভাজন।


6.  রাজাবলি নামক ইতিহাস বইতে কোন সময়ের কথা রয়েছে ?

উত্তর:-  ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু প্রায় বিদ্যালঙ্কার রচিত রাজাবলি নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। রাজাবলিতে মহাভারতের রাজা যুধিষ্ঠিরের কাল থেকে 'কলিযুগ' পর্যন্ত সময়ের কথা রয়েছে।


7.  কে, কবে History of British India নামে গ্রন্থটি লিখেছেন ?

উত্তর:- ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ঐতিহাসিক জেমস মিল History of British India নামে গ্রন্থটি লিখেছেন।


 ৪. জেমস মিল তাঁর বইতে ভারতের ইতিহাসকে ক-টি ভাগে ভাগ করেন এবং কী কী?

উত্তর:-জেমস মিল তাঁর বইতে ভারতের ইতিহাসকে তিনটি। ভাগে ভাগ করেন। সেগুলি হল- (@ হিন্দু যুগ (a) মুসলিম যুগ ব্রিটিশ যুগ।


9. ভারতের আধুনিককালের ইতিহাসের দুটি উপাদানের নাম লেখো ।

উত্তর:-ভারতের আধুনিককালের ইতিহাসের দুটি উপাদান হল ১) প্রশাসনিক কাগজপত্র ২) সংবাদপত্র।


 10.  কে, কবে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন ?

উত্তর:- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে মুম্বাইয়ে অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন।


 11. ব্রিটিশ সরকার অভিহিত যে-কোনো দুটি হাঙ্গামার নাম লেখো।

উত্তর:- ব্রিটিশ সরকার অভিহিত দুটি হাঙ্গামা হল তিতুমীরের বারাসাত বিদ্রোহ সিধু-কানহুর সাঁওতাল বিদ্রোহ।



12. কোন্ দুটি অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মনোনীত হন ?

উত্তর:-  ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের হরিপুরা এবং ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ত্রিপুরি অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মনোনীত হন ।


13. সাম্রাজ্যবাদ বলতে কী বোঝায় ?

উত্তর:- সাম্রাজ্যবাদ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী দেশ তার তুলনায় দুর্বল আর-একটি দেশের ওপর প্রভুত্ব কায়েম করে তাকে নিজের দখলে আনে। ওই দুর্বল দেশের জনগণ, ধনসম্পদ প্রভৃতি শক্তিমান দেশটি নিজের প্রয়োজনমতো পরিচালনা করে। এই প্রক্রিয়া সাম্রাজ্যবাদ নামে পরিচিত।


সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রশ্নের মান-2


১.পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের গুরুত্ব লেখ

উত্তর- 1761 খ্রিস্টাব্দে মারাঠা ও আহমদ শাহ আবদালির মধ্যে সংঘটিত পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ ছিল মারাঠাদের জাতীয় বিপর্যয় । এই যুদ্ধের গুরুত্ব বিভিন্ন দিক থেকে ছিল-

১) এই যুদ্ধে মারাঠা শক্তির পতন হয়

২. পেশোয়ার সম্মান নষ্ট হয়

৩.উত্তর ভারতে ইংরেজ ও দক্ষিণ ভারতে হায়দার আলির উত্থাননের পথ সহজ হয়।


২. মহাসনদ কী?

উত্তর-1717 খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি জন সুরমান মোগল সম্রাট ফারুকশিয়ারের কাছ থেকে বার্ষিক 3 হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলা-বিহার-উরিষ্যা বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার ফরমান আদায় করে। এর দ্বারা কোম্পানি অতিরাষ্ট্রিক সুবিধা লাভ করে তাই একে কোম্পানির ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলে


৩. মুর্শিদকুলি খানের আমলে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ উল্লেখ করো।

বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খান ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের সর্বদা বাণিজ্যে উৎসাহিত করতেন । তার আমলে বাংলায় বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছিল। নবাব মুর্শিদকুলি খানের  শাসন পরিচালনা ইউরোপীয় বণিকদের বাণিজ্যিক কার্যকলাপ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা বাংলার ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ।


৪. ফারুকশিয়ারের ফরমান এর দুটি শর্ত লেখ।

উত্তর- 1717 খ্রিস্টাব্দে দিল্লির মোগল সম্রাট ফারুকশিয়ার কর্তৃক একটি ফরমান জারি হয়। ফরমান এর দুটি শর্ত হলো-১) ব্রিটিশ কোম্পানি 3000 টাকার বিনিময়ে বাংলায় বাণিজ্য করবে।

২) কোম্পানির কেউ চুরি করলে তাকে বাংলার নবাব শাস্তি দেবেন এবং কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৫. দস্তক কি?

উত্তর- ফারুকশিয়ারের ফরমান ইংরেজ কোম্পানি ও তার কর্মচারীরা সুবা বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার যে ছাড়পত্র পায় তাকে বলা হয় দস্তক।


৬. কবে কাদের মধ্যে আলিনগরের সন্ধি হয়েছিল?

উত্তর- ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইংরেজ কোম্পানির মধ্যে আলিনগরের সন্ধি হয়।


৭. আলিনগরের সন্ধির শর্ত কি ছিল,বা এই সন্ধির তাৎপর্য কি?

উত্তর- আলিনগরের সন্ধির শর্ত গুলি ছিল-

১) ইংরেজরা বিনা শুল্কে বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্য করবে।

২) ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ পুনরায় নির্মাণ করবে।

৩) কোম্পানি তার নিজের নামাঙ্কিত মুদ্রা তৈরি করতে পারবে।


৮. কবে কাদের মধ্যে বক্সারের যুদ্ধ হয়?

1764 খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসের বাংলার নবাব মীরকাসিম অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম এর যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বক্সার যুদ্ধ হয়।


৯. এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি গুরুত্ব কি?

উত্তর- এলাহাবাদের সন্ধি দ্বারা-

১) ইংরেজ কোম্পানি সুবা বাংলায় দেওয়ানী অধিকার লাভ করে।

২) কোম্পানি মুঘল সম্রাটকে বার্ষিক 26 লক্ষ টাকা দিতে সম্মত হয়।


১০. কবে কাদের মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি হয়?

উত্তর-1765 খ্রিস্টাব্দের 12 ই আগস্ট মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তথা লর্ড ক্লাইভের মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।



২২. বেসিনের চুক্তি (১৮০২)গুরুত্ব বা শর্ত কি ছিল?

উত্তর- বেসিনের চুক্তির গুরুত্ব হলো এই যে পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও লর্ড ওয়েলেসলি অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি স্বীকার করে নেন এবং ইংরেজ সেনাবাহিনীর ব্যয় নির্বাহের জন্য তিনি নিজের রাজ্যের একাংশ  ব্রিটিশ কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেন।


২৩. সুরাটের সন্ধি কেন স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তর-1772 খ্রিস্টাব্দে পেশোয়া মাধব রাও এর মৃত্যু হলে পেশোয়া পদ নিয়ে নিয়ে মারাঠাদের  মধ্যে গৃহবিবাদ শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুর পেশোয়া পদ ফিরে পেতে ইংরেজদের শরণাপন্ন হন এবং দু'পক্ষের মধ্যে সুরাটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


২৪. ফারুকশিয়ারের ফরমান কি?

উত্তর-1717 খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট ফারুকশিয়ার যে ফরমান জারি করেন তা ফারুকশিয়ারের ফরমান নামে পরিচিত। এই ফরমান অনুযায়ী কোম্পানি বাংলায় অবাধ বাণিজ্যের অধিকার ও অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করে।


২৫. কবে কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তর- 1776 খ্রিস্টাব্দে বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ও পেশোয়া দ্বিতীয় মাধবরাও এর  মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


২৬. চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের ফল কি হয়েছিল?

উত্তর-1799 খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের মহীশুরের অধিপতি টিপু সুলতান পরাজিত ও নিহত হন। এই যুদ্ধের ফলে-

১) দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যটির বৃহৎ অংশ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধিকার করে।

২) মহীশুরের কিছু অংশ হায়দারাবাদ কে দেওয়া হয়।

৩) মহীশুরের অবশিষ্ট অংশ মহীশুরের প্রাচীন  হিন্দু রাজবংশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

৪) মহীশূর এ কোম্পানির সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।


২৭. পুরন্দরের সন্ধির শর্ত গুলি কি ছিল?

উত্তর- ১) সুরাটের সন্ধি বাতিল হয়।

২) ইংরেজরা রঘুনাথ রাইয়ের বদলে দ্বিতীয় মাধবরাও কে পেশা বলে মেনে নেয়।

৩) রঘুনাথ রাওকে বৃত্তি দানের ব্যবস্থা করা হয়।

৪) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি 12 লক্ষ টাকা পেশোয়ার নিকট থেকে আদায় করে।


২৮. সলবাই সন্ধির(১৭৮২) শর্তগুলি কি ছিল?

উওর- ১) ইংরেজরা মাধবরাও কে পেশা বলে মেনে নেয়।

২) রঘুনাথ রাওকে তিন লক্ষ টাকা বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।

৩) ইংরেজরা সলসেট, বেসিন,থানে প্রভৃতি অঞ্চল মারাঠদের কাছ থেকে লাভ করে।


২৯. বেসিনের চুক্তির গুরুত্ব কী ছিল?

বেসিনের চুক্তির গুরুত্ব হলো এই যে, পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও লর্ড ওয়েলেসলির অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি স্বীকার করে নেন এবং ইংরেজ সেনাবাহিনীর ব্যয় নির্বাহের জন্য তিনি নিজের রাজ্যের একাংশ ব্রিটিশ কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেন।


৩০. স্বত্ববিলোপ নীতির মূল কথা কি ছিল?

লর্ড ডালহৌসি প্রবর্তিত স্বত্ববিলোপ নীতির মূল কথা হলো ভারতের কোন দেশীয় রাজ্যের রাজা কোম্পানির অনুমতি ছাড়া দত্তকপুত্র গ্রহণ করতে পারবে না। উপরন্তু তিনি মারা গেলে ওই রাজ্যটি সরাসরি ব্রিটিশ কোম্পানি দখল করে নেবে।


No comments:

Post a Comment